সভ্যতার ছোয়া লেগেছে।
একসময় কত রকমের রীতিনীতির প্রচলন ছিল।
কোনো টি সমাজের জন্য ছিলো ভালো।
আবার কোনো টি খুবই জঘন্য, বর্বর।
দক্ষিণ ভারতে এমনই ঘৃণ্য প্রথা ছিল ঊনিশ শতকে ৷ যেখানে নিম্নবর্ণের হিন্দু মহিলাদের অধিকার ছিল না বক্ষ আবরণী ব্যবহার করার ৷ মহিলাদের স্তন ঢেকে রাখতে গেলে স্তনের ওজন ও আকার অনুযায়ী দিতে হত ‘স্তন কর’ বা ‘ব্রেস্ট ট্যাক্স’ ৷ স্তানীয় ভাষায় ‘মুলাকরম।
সে সময় হিন্দু ব্রাহ্ণণ সমাজ নিয়ম করেছিল, নিম্নবর্ণের মহিলারা বুকের উপর কোনও কাপড় পরিধান করতে পারবেন না ৷ এটা তাঁদের ধর্ম বিরুদ্ধ ৷ যদি কেউ স্তন ঢাকার চেষ্টা করেন তাঁকে ‘স্তন কর’ দিতে হবে ৷ ঊনিশ শতকের প্রথমার্ধে এই নিয়ম দক্ষিণ ভারতের একটি অঞ্চলে চালু ছিল ৷ সেই কর আদায় হত মহিলাদের স্তনের আকার ও ওজনের উপর ভিত্তি করে ৷ করের টাকা স্থানীয় উচ্চবর্ণের ব্রাহ্মণরা ভোগ করতেন ৷ তবে সিংহভাগ টাকাই যেত পদ্মনাভ মন্দিরের প্রধান পুরোহিতের কাছে ৷
অতঃপর এক সাহসী মেয়ে সবকিছুর বিরুদ্ধে রুখে দাড়ায়। যাঁর বলিদানে পিছু হঠতে বাধ্য হয়েছিল উচ্চবর্ণের জুলুম ৷ তাঁর নাম ‘নাঙ্গেলি’ ৷ সামাজিক এই কুপ্রথার বিরুদ্ধে গর্জে উঠেছিলেন তিনি ৷ কেটে ফেলেছিলেন নিজের স্তন দু’টি ৷ উনিশ শতকের প্রথম দিকে ভারতের ট্রাভানকোর রাজ্যের চেরথালায় বাস করতেন নাঙ্গেলি ৷ নিম্ন-হিন্দু বর্ণের এজহাভা গোত্রের ছিলেন তিনি। তাঁর স্বামীর নাম ছিল চিরুকান্দান। চাষাবাদ করে আর গৃহস্থলীর কাজ করে জীবন নির্বাহ করতেন তাঁরা।
কিন্তু সমাজের এই প্রথা মানতে রাজি হননি নাঙ্গেলি ৷ কাপড়ে স্তন ঢেকে উচ্চবর্ণের রোষের মুখে পড়তে হয়েছিল তাঁকে ৷ তবে নাঙ্গোলির এই লড়াইয়ে সবসময় তাঁর পাশে ছিলেন তাঁর স্বামী চিরুকান্দান ৷ তবে নাঙ্গেলি আর চিরুকান্দান ‘স্তন কর’ দিতে পারেননি ৷ তার পরিবর্তে নিজের বক্ষযুগলই কেটে ফেলেছিলেন তেজস্বী ওই মেয়ে ৷ স্ত্রীর বিরহ সহ্য করতে না পেরে জ্বলন্ত চিতায় নিজেকে সঁপে দিয়েছিলেন চিরুকান্দানও ৷ সম্ভবত সেটাই ভারতের প্রথম পুরুষের ‘সতীদাহ’
তবে কালের অতলে হারিয়ে গিয়েছে নাঙ্গোলি আর চিরুদান্দানের নাম ৷
ইতিহাস তাদের যায়গা দেয়নি।
কিন্তু তাদের যায়গা সেই সব সাহসী মানুষের মনের ভিতর আছে যারা আজো অন্যায়ের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ায়।
Regards : Rainbow
এই ক্যাটাগরির আরো কিছু চমৎকার লেখা পড়ুন
১) আমাদের বেলকনিগুলি প্রতিদিনের সুখ দুঃখের সাক্ষী হয়ে থাকে। পড়ুন অনবদ্য লেখা।
ক্লিক করুনঃ আমাদের বেলকনি খুবই অদ্ভুত
২) আপনার যদি একইসাথে সুন্দরী প্রেমিকা এবং এসিডিটি থাকে। তবে দেখা করার সময় আপনার সাথে কি হতে পারে? ভালবাসা টিকবে নাকি ব্রেক আপ হবে।? পড়ুন হাস্যরসে ভরপুর পেটে গ্যাস সমস্যা নিয়ে অনবদ্য লেখা।
ক্লিক করুনঃ সুন্দরী গার্লফ্রেন্ড বনাম এসিডিটি / A to Z about acidity
0 Comments